শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২৯ অপরাহ্ন
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি, কালের খবর : নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড়ে সরকারি জায়াগা দখল করে লাখ লাখ টাকার বাণিজ্য। চলছে প্রকাশ্যে পরিবহন চাঁদাবাজি। সুবিধাবাদী কয়েকজন আওয়ামীলীগ নেতা ও জনপ্রতিনিধির ছত্রছায়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দু‘পাশে নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধিনস্থ সরকারি জায়গাতে অবৈধ ভাবে পরিবহন টিকিট কাউন্টার ও ফুটপাথ দোকান গড়ে তুলে আর্থিক ফায়দা লুটছে একটি মহল। অবৈধ ভাবে গড়ে উঠা কমপক্ষে ৫ শতাধিক ফুটপাথ দোকানে দেয়া হয়েছে চোরাই বিদ্যুৎ লাইন সংযোগ। মহাসড়কের দু‘পাশ বেদখল হয়ে পড়ায় জনতার চলাচলে চরম বিঘ্ন ঘটলেও সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষ নিরব।
জনবহুল শিমরাইল মোড় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উত্তর পাশে নারায়ণগঞ্জ সওজ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধিনস্থ সরকারি জায়গা দখল করে অবৈধ ভাবে গড়ে তুলা হয়েছে অর্ধশতাধিক পরিবহন টিকিট কাউন্টার। সাথে রয়েছে ফুটপাথ দোকানপাট। প্রতিটি টিকিট কাউন্টার থেকে মোটা অংকে অগ্রিম ও দৈনিক ৫‘শ টাকা করে জায়গা ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। এছাড়াও ফুটপাথ দোকান থেকে দৈনিক চাঁদা আদায় করছে ২‘শ টাকা করে। মহাসড়কের দুক্ষিণ পাশে রেন্ট-এ কার ষ্ট্যান্ড থেকে হাজী আহসান উল্লাহ সুপার মার্কেট পর্যন্ত সরকারি জায়গা দখল করে গড়ে তুলা হয়েছে কমপক্ষে ৫ শতাধিক ফুটপাথ দোকান। এসব দোকানের পজিশন নিতে সর্ব নিম্ম ৫০ হাজার টাকা করে অগ্রিম ও দৈনিক ২ থেকে ৫‘শ টাকা করে জায়গা ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। পরিসংখ্যান মতে দৈনিক কমপক্ষে কয়েক লাখ টাকা আদায় হচ্ছে এসব দোকানপাট থেকে।
এ ছাড়াও শিমরাইল মোড়ে পরিবহন চাঁদা আদায় করা হচ্ছে প্রকাশ্যে। ব্যাটারী চালিত অটো রিকশা থেকে শুরু করে ইঞ্জিন চালিত ছোট বড় সব ধরনের যানবাহন থেকে আদায় করা হচ্ছে চাঁদা। চাঁদার পরিমান নির্দিষ্ট করে উল্লেখ করা সম্ভব না হলেও অন্তত দৈনিক কয়েক লাখ টাকা হবে বলে জানায় পরিবহন শ্রমিকরা।
স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ক্ষমতাসিন দলের সুবিধাবাদী কিছু নেতা ও কয়েকজন জনপ্রতিনিধি জড়িত রয়েছে চাঁদাবাজি ও সরকারি জমি দখল বাণিজ্যের সাথে। অবৈধ বাণিজ্যের অর্থ বিভিন্ন মহলে ভাগ বন্টন হচ্ছে। স্থানীয় শীর্ষ কয়েকজন আওয়ামীলীগ নেতা, পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তা, ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তা, নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের অসাধু প্রকৌশলী ও দুর্ধর্ষ কয়েকজন সন্ত্রাসী নিয়মিত পাচ্ছে মাসোহারা। শিমরাইল মোড়ে অবৈধ আয়ের অন্তত ২০ টি সেক্টর রয়েছে। এসব সেক্টর নিয়ন্ত্রনের জন্য কয়েকটি গ্রুপ তৈরি হয়েছে। একে গ্রুপ একেক সেক্টর নিয়ন্ত্রন করছে। দখল কারীরা এতই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে, সড়ক পারাপারের জন্য নির্মিত ফুটওভারব্রিজ দখল করেও দোকান পাট বসিয়ে চাঁদা আদায় করছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মহাসড়কের পাশে ও ফুটওভারব্রিজ দখল করে দোকানপাট গড়ে উঠায় পথচারীদের চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। প্রতিনিয়তই মানুষের জটলা লেগে থাকে। এতে বখাটে, পকেট মার ও ছিনতাইকারীরা থাকে সক্রিয়। স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী ও শিল্পকারখানার নারী শ্রমিকরা মানুষের ভিরে বখাটের হাতে অপদস্থ হচ্ছে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর নারী পথচারীরা হয়ে পড়ে অরক্ষিত। আদমজী ইপিজেডের হাজার হাজার নারী শ্রমিকের পদচারনে মুখরিত শিমরাইল মোড়ে সন্ধ্যার পর পথ চলা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। ফুটওভারব্রিজ ও ফুটপাথ ভির এড়াতে মহাসড়কের উপর দিয়ে পথ চলতে গিয়ে প্রতিনিয়তই গাড়ির চাপায় পড়ে নিহত হচ্ছেন পথচারীরা। জনস্বার্থে শিমরাইল মোড়ের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দুপাশ ও ফুটওভারব্রিজ দখল মুক্ত করে পথচারীদের নিরাত্তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি জানান সাধারণ মানুষ।